‘প্রাণ জুস’ খেয়ে মৃত্যুপথযাত্রী বরিশালে মাদ্রাসাছাত্রী ঝুমুর!
বরিশালে ‘প্রাণ ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক’ পান করে ঝুমুর (১৫) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ছাত্রীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি যবার পর আবারও অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
তাৎক্ষণিক সংকটাপন্ন অবস্থায় মাদ্রসাছাত্রী ঝুমুরকে ফের গত ২৫ মে বরিশাল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে ঝুমুর।
স্কুলছাত্রী ঝুমুর বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ডিঙামানিক গ্রামের দিনমজুর জব্বার শরীফের মেয়ে। বুখাইনগর মহিলা মাদ্রাসার নবম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে সে। রোল নাম্বার ৩৮।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝুমুর সাংবাদিকদের বলেন- সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে বুখাইনগর বাজারের পাশে গাড়ির স্টেশন সংলগ্ন এক দোকান থেকে একটি ‘প্রাণ জুস’ কিনেছি । ওই জুসটি পান করার পর তার দুই ঠোঁটে ফোসকা পরে যায়। শরীরের শক্তি মিনিটের ব্যবধানে চলে যায়।
এমনকি একাকি উঠে বসতে পারে না। প্রাণ জুস পান করার পর থেকেই এসব রোগে ভুগছেন তিনি। এমন অবস্থা তার জীবনে এই প্রথম হয়েছে। বাঁচবে কিনা তা নিয়েও তার পরিবার সন্দিহান।
ঝুমুরের মা রুশিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন- তার মেয়ে পূর্বে কোন রোগে আক্রান্ত ছিল না। এই প্রাণ জুস পান করার পরই এখন তার মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। তার সামনেই মেয়ে জুস পান করেছিল। মাকে নিয়ে একত্রে জুস পান করবে, তাই একা পান করেনি।
পান করার সাথে সাথে ঝুমুর তার মুখমন্ডল চেপে ধরে বলেন ‘মা আমাকে বাঁচাও’। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পরলেও প্রাণ কোম্পানির পক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর কেউ খোঁজখবর নেয়নি।
এমতাবস্থায় বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে মাদ্রাসাছাত্রী ঝুমুরের অসহায় পরিবার।’’
এমনকি প্রাণ জুস ডিপো বরিশাল এডমিন ও কালিজিরা প্রাণ জুস ডিপো ইনচার্জকে বিয়টি অবহিত করা হলেও তারা কোন ভুমিকা রাখেনি। বরং পুরো বিষয়টি তারা এড়িয়ে যেতে চাইছেন।
বরিশাল ডিপো ইনচার্জ আল মামুন বলেন- জুস উৎপাদন হয় ঢাকায়। বরিশালে রয়েছে ডিপো আর ডিস্ট্রিবিউটর। বিস্তারিত তথ্য জানতে তিনি প্রাণ ডিপো বরিশাল এডমিন মাহাবুবুর রহমানের সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দেন।
বরিশাল নগরীর সিএন্ডবি রোড সংলগ্ন অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি মাহবুবুর রহমানকে। মুঠোফোনে আলাপচারিতা হলে তিনি ঢাকা অফিসের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
ঢাকা হেড অফিসের কর্মকর্তাদের মুঠোফোন বা টেলিফোন নাম্বার চাইলে তিনি দেয়ার আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে জানান, এসব তথ্য কালিজিরা প্রাণ জুস ডিপো ইনচার্জ আল মামুন দিতে পারবেন।
এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় কালিজিরা প্রাণ জুস ডিপো ইনচার্জ আল মামুনের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, দেখতে হবে কোন ডিলারের অর্ন্তভূক্ত থাকা প্রাণ জুস পান করে এমন ঘটনা ঘটেছে। ডিলার তো অনেকেই রয়েছে। ডিলার কি প্রাণ জুস উৎপাদন করে?
না কোম্পানি উৎপাদন করে সাংবাদিদের এমন প্রশ্নে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ডিপো ইনচার্জ।
শেষাবধি তিনি ঢাকার কোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার নাম্বার না দিয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন।’’
No comments:
Post a Comment