Wednesday, May 31, 2017

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্ভোধনী ম্যাচে আজ ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।  ওভালে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩ টা ৩০ মিনিটে ম্যাচটি শুরু হবে।  এখন পর্যন্ত একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে ৪ ম্যাচে।  যার দুইটিই এসেছে বিশ্বকাপে।  ঘরের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারায় টাইগাররা। 

২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংলিশদের বিপক্ষে দলকে ওপেনিংয়ে ভালো সূচনা এনে দিতে পারেননি টাইগার ওপেনার
 তামিম ইকবাল।  সেই ম্যাচে মাত্র দুই রান করে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন এই বাঁহাতি। 

ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ জিতলেও সেই ম্যাচে দলের হয়ে রান করতে না পারার আক্ষেপ হয়তো এখনও রয়ে গিয়েছে এই টাইগার ব্যাটসম্যানের মাঝে।  তাই বৃহস্পতিবার ইংলিশদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে দেশের হয়ে নিজের সেরাটা খেলতে চান তামিম। 

বিশ্বকাপের পর অবশ্য নিজেকে ক্রিকেট বিশ্বে অন্যরকম ভাবে মেলে ধরেছেন তামিম।  বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে ব্যাট হাতে নিজের জাত চিনিয়ে দেশকে নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। 

আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের এই ওপেনারের উপরই নজর থাকবে সবার।  ওপেনিংয়ে দলকে যদি উড়ন্ত সূচনা এনে দিতে পারেন তাহলে বলাই যায় আবারও ইংলিশদের হারিয়েও দিতে পারে টাইগাররা। 

তাই বৃহস্পতিবারের ম্যাচে বাংলাদেশের ‘তুরুপের তাস’ হিসেবে কাজ করবেন তামিম ইকবাল।  টাইগার ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের উপর যেমন সবার নজর থাকবে তেমনি ইংলিশ পেসার মার্ক উডের উপর ভরসা রাখবে ইংলিশরা। 

আইসিসি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এই ম্যাচের জন্য এই দুই ক্রিকেটারকে ‘তুরুপের তাস’ এবং ‘পেস এক্সপ্রেস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।  ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ইংলিশদের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছিল মার্ক উডের। 

এরপর দেশের হয়ে খেলেছেন মাত্র ১৫টি ওয়ানডে।  আর পারফর্মেন্সের সুবাদে জয়াগা করে নিয়েছেন ইংলিশদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে।  এছাড়াও সম্প্রতি শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ইংলিশদের জয়ের নায়ক ছিলেন এই পেসার। 

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৭ রান।  কিন্তু শেষ ওভারে এই পেসারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২ রানের জয় পায় ইংলিশরা।  যেকারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে মার্ক উডের উপরে নজর থাকবে সবার। 

 উল্লেখ্য,  আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সামনে ইংল্যান্ড বধের হ্যাটট্রিকের সুযোগও থাকছে !

‘প্রাণ জুস’ খেয়ে মৃত্যুপথযাত্রী বরিশালে মাদ্রাসাছাত্রী ঝুমুর!


‘প্রাণ জুস’ খেয়ে মৃত্যুপথযাত্রী বরিশালে মাদ্রাসাছাত্রী ঝুমুর!

বরিশালে ‘প্রাণ ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক’ পান করে ঝুমুর (১৫) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ছাত্রীকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি যবার পর আবারও অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।

তাৎক্ষণিক সংকটাপন্ন অবস্থায় মাদ্রসাছাত্রী ঝুমুরকে ফের গত ২৫ মে বরিশাল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে ঝুমুর।
স্কুলছাত্রী ঝুমুর বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ডিঙামানিক গ্রামের দিনমজুর জব্বার শরীফের মেয়ে। বুখাইনগর মহিলা মাদ্রাসার নবম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে সে। রোল নাম্বার ৩৮।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঝুমুর সাংবাদিকদের বলেন- সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে বুখাইনগর বাজারের পাশে গাড়ির স্টেশন সংলগ্ন এক দোকান থেকে একটি ‘প্রাণ জুস’ কিনেছি । ওই জুসটি পান করার পর তার দুই ঠোঁটে ফোসকা পরে যায়। শরীরের শক্তি মিনিটের ব্যবধানে চলে যায়।
এমনকি একাকি উঠে বসতে পারে না। প্রাণ জুস পান করার পর থেকেই এসব রোগে ভুগছেন তিনি। এমন অবস্থা তার জীবনে এই প্রথম হয়েছে। বাঁচবে কিনা তা নিয়েও তার পরিবার সন্দিহান।
ঝুমুরের মা রুশিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন- তার মেয়ে পূর্বে কোন রোগে আক্রান্ত ছিল না। এই প্রাণ জুস পান করার পরই এখন তার মেয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। তার সামনেই মেয়ে জুস পান করেছিল। মাকে নিয়ে একত্রে জুস পান করবে, তাই একা পান করেনি।
পান করার সাথে সাথে ঝুমুর তার মুখমন্ডল চেপে ধরে বলেন ‘মা আমাকে বাঁচাও’। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পরলেও প্রাণ কোম্পানির পক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর কেউ খোঁজখবর নেয়নি।
এমতাবস্থায় বরিশাল জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে মাদ্রাসাছাত্রী ঝুমুরের অসহায় পরিবার।’’
এমনকি প্রাণ জুস ডিপো বরিশাল এডমিন ও কালিজিরা প্রাণ জুস ডিপো ইনচার্জকে বিয়টি অবহিত করা হলেও তারা কোন ভুমিকা রাখেনি। বরং পুরো বিষয়টি তারা এড়িয়ে যেতে চাইছেন।
বরিশাল ডিপো ইনচার্জ আল মামুন বলেন- জুস উৎপাদন হয় ঢাকায়। বরিশালে রয়েছে ডিপো আর ডিস্ট্রিবিউটর। বিস্তারিত তথ্য জানতে তিনি প্রাণ ডিপো বরিশাল এডমিন মাহাবুবুর রহমানের সাথে আলোচনা করার পরামর্শ দেন।
বরিশাল নগরীর সিএন্ডবি রোড সংলগ্ন অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি মাহবুবুর রহমানকে। মুঠোফোনে আলাপচারিতা হলে তিনি ঢাকা অফিসের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
ঢাকা হেড অফিসের কর্মকর্তাদের মুঠোফোন বা টেলিফোন নাম্বার চাইলে তিনি দেয়ার আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে জানান, এসব তথ্য কালিজিরা প্রাণ জুস ডিপো ইনচার্জ আল মামুন দিতে পারবেন।
এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় কালিজিরা প্রাণ জুস ডিপো ইনচার্জ আল মামুনের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, দেখতে হবে কোন ডিলারের অর্ন্তভূক্ত থাকা প্রাণ জুস পান করে এমন ঘটনা ঘটেছে। ডিলার তো অনেকেই রয়েছে। ডিলার কি প্রাণ জুস উৎপাদন করে?
না কোম্পানি উৎপাদন করে সাংবাদিদের এমন প্রশ্নে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ডিপো ইনচার্জ।
শেষাবধি তিনি ঢাকার কোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার নাম্বার না দিয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন।’’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ যেসব ম্যাচে জয় পেয়েছে


আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। এরপরই পর্দা উঠছে ক্রিকেটবিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির। আসরের প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত এই দেশটির বিপক্ষে বাংলাদেশের সাফল্য কিন্তু নজরকাড়া। দুদলের সর্বশেষ পাঁচ সাক্ষাতের তিনবারই জয়ী দলটির নাম বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত ১৮ ম্যাচের চারটিতে জিতেছে লাল-সবুজের দল, যার তিনটিই এসেছে গত দুই বছরে। গত বছর গুলোতে ইংল্যান্ডের তুমুল পরীক্ষা নেয় টাইগার শিবির। আসুন, দেখে নেওয়া যাক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মহাকাব্যিক সেই চার জয়ের টুকরো অংশগুলো।

১০ জুলাই ২০১০, ব্রিস্টল, ইংল্যান্ড
১৯৯৭ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ, যার সবকটিতেই হার মানতে হয় টাইগারদের। এমনকি ক্রিকেটের কুলীন এই দেশটির বিপক্ষে বড় ধরনের প্রতিরোধও পড়তে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়ার পর প্রথম ওয়ানডেতেও বড় পরাজয়ের সাক্ষী হয় বাংলাদেশের। ব্রিস্টলে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে তাই বাংলাদেশের পক্ষে বাজি লাগানোর মতো মানুষ ছিল না। টস হেরে আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ডের সামনে ২৩৭ রানের লক্ষ্য রাখে বাংলাদেশ। টাইগারদের পক্ষে ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। এ ছাড়া জহুরুল ইসলাম ৪০ ও মাহমুদউল্লাহ করেন ২৪ রান।

জবাবে


দারুণ শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। তবে ইংলিশদের স্কোর ৫০ পেরোতেই জোড়া আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। এরপর ইংলিশ ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডখ্যাত ইয়ন মরগান ও পল কলিংউডকে ফিরিয়ে দেন আবদুর রাজ্জাক। শেষদিকে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কিপটে বোলিংয়ে তিন বল বাকি থাকতেই ২৩১ রানে থেমে যায় ইংলিশদের ইনিংস। বল হাতে মাশরাফি, আবদুর রাজ্জাক, শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন ও সাকিব আল হাসান প্রত্যেকেই নেন দুটি করে উইকেট। ব্যাট হাতে ২২ রান ও দারুণ বল করে দুটি উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন মাশরাফি। টাইগারদের সামনে সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা ছিল, তবে শেষ ম্যাচটা হেরে প্রথম ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে।

১১ মার্চ ২০১১, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম
প্রথম জয়ের এক ম্যাচ পরেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ। ইংলিশদের বিপক্ষে সেই জয়টা অবশ্য কোনো মহাকাব্যের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথটা পিচ্ছিল হয়ে যায় বাংলাদেশের।

টস হেরে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে অসহায় হয়ে ৪৯.৪ ওভারে ২২৫ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশদের ইনিংস। ২২৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। তবে এরপরই পথ হারিয়ে বসে টাইগাররা। একটা পর্যায়ে ১৬৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শফিউল ইসলামের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে এক ওভার হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে ২৪ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন শফিউল। আর মহামূল্যবান ২১ রান করেন রিয়াদ।

৯ মার্চ ২০১৫, অ্যাডিলেড, অস্ট্রেলিয়া
২০১১ সালের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে আর কোনো ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়নি ইংল্যান্ড। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে আবার টাইগারদের সামনে পড়ে ইংলিশ লায়নরা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অসাধারণ এক শতকে ২৭৫ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করায় বাংলাদেশ। মুশফিকুর করেন ৮৯ রান। ২৭৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে নেমে ২৬০ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশদের ইনিংস। বল হাতে চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের এই অসাধারণ জয়ের অন্যতম রূপকার রুবেল হোসেন। ১৫ রানের এই জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ।

৯ অক্টোবর ২০১৬, মিরপুর
তৃতীয় জয়ের পর আর এক ম্যাচের ব্যবধানে চতুর্থ জয়টা আসে বাংলাদেশের। তাসকিন আহমেদ ও মাশরাফি বিন মুর্তজার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঢাকায় ইংল্যান্ডকে ৩৪ রানে হারায় টাইগাররা। মাহমুদউল্লাহর ৭৫ ও মাশরাফির ৪৪ রানে ভর করে ২৩৯ রানের মাঝারি স্কোর দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ২০৪ রানে। মাশরাফি চারটি ও তাসকিন তিনটি করে উইকেট নেন।
Add caption
খবরটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন

ঘূর্ণিঝড় মোরা: ভয়ে বিড়ালের কোলে হাঁসের বাচ্চার আশ্রয়

প্রবাদে আছে, বিপদে পড়লে বাঘে-মহিষেও একঘাটে পানি খায়! ঠিক এই ছবিটিও এমন কথা বলছে। মঙ্গলবার সকালে তেমনি এক ঘটনা ঘটলো কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায়।

ঘূর্ণিঝড় 'মোরা'তে যখন বিধ্বস্ত বাড়ি-ঘর। তখন মানুষগুলো আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে ছুটছে। যে যার মতো নিরাপদে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ঠিক সে সময় ঘটলো এই ঘটনা!

চারদিকের এই বিপদের মধ্যে তখন একটি হাঁসের বাচ্চা পেল নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সেই আশ্রয়স্থলটি আর কেউ নয়। সেটি হলো- বিড়াল মাসি। বিড়ালটি বুকের মধ্যে নিজের বাচ্চা'র মতো আগলে রেখেছে হাঁসের বাচ্চাটিকে। এটি বিশ্বাস অযোগ্য হলেও বিষয়টি সত্য।

এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, কিছু কিছু ছবির ক্যাপশন দেয়াটা খুবই কঠিন। তার মাঝে এটা একটা। ঘূর্নীঝড় মোরা'র কবলে যখন বাংলাদেশ। প্রানভয়ে মানুষজন চারিদিকে ছুটাছুটি করতেছিলো। ঠিক তখনি একটি বিড়ালের কোলে আরেকটি হাসের বাচ্চা এভাবেই আশ্রয় নিয়েছিলো। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলাতে।

তবে এই ছবিটার সত্যতা যাচাই করা আমাদের পক্ষ্যে সম্ভব হয়নি।
খবরটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন

Tuesday, May 30, 2017

সম্পর্ক ভাঙে যেসব কারণে


পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর একটি সম্পর্ক হচ্ছে ভালোবাসার সম্পর্ক। ভালোবাসার কাঁধে ভর করেই দাঁড়িয়ে থাকে একেকটি সম্পর্ক। আর তাতে আস্তর হিসেবে প্রলেপ পরে বিশ্বাসের আর অনুভূতির। ভালোবাসা এভাবেই জুড়ে থাকে জগত-সংসারে। প্রত্যকটি সম্পর্কের মাঝে লুকিয়ে থাকে ভালোবাসা। যখন কোনো সম্পর্কে বকাঝকা বেশি হয় কিংবা চোখে চোখে বেশি রাখা হয় তার মানে এই না যে সেই মানুষটি আপনাকে বিশ্বাস করে না। বরং এর মানে এই যে, সেই মানুষটি আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসে বলে সব সময় আপনার সুরক্ষা চায়।
তবুও সম্পর্কের মাঝে অবিশ্বাস জন্মায়। তাতে নানাভাবে আরেকটি মানুষের জায়গা হয়ে যায়। যাকে একটি সময় জীবনের সবচেয়ে কাছের আর আপন মানুষ মনে করতেন সেই মানুষটিই চোখের পলকে পাল্টে যায়। আচরণে আসে অনেক পরিবর্তন। যা হচ্ছে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার পূর্বাভাস। যে মানুষটিকে সে ভালোবাসতো সেই মানুষটিতে কি তাহলে পরিবর্তন এসছে! আপনার মনের অজান্তেই কি আপনি পাল্টে যাচ্ছেন। সম্পর্কের কোনো মোড়ে এসে এটি তার রূপ পাল্টাচ্ছে। কারণ যাই হোক ফলাফলের খাতায় যার কোন মানে নেই সেই জীবনের সমীকরণ দিয়ে জীবনতরী পার করা যায় না। তাই সম্পর্কে ভাঙন ধরার আগেই কি কারণে সম্পর্ক ভাঙতে পারে তা জেনে নিন।
বোরিং কথা আর কথা না বলার বাহানা
আপনি নানা কারণেই ক্লান্ত থাকতে পারেন। কখনো তা পড়াশুনার আবার কখনো ব্যক্তিগত কারণে। তাই বলে আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষের সাথে কথা না বলার বা কম বলার বাহানা খুঁজতে পারেন না। আপনার এই বাহানা প্রথম দিকে মানুষটি হয়তো খুব মারাত্মক আকারে নেবে। এরপরেই শুরু হবে সমস্যা। সে আপনাকে তার জন্য সময় বের করতে বলতে গিয়েও বলতে পারবে না। সময় কাটাতে খুঁজবে আরেক সঙ্গী। অন্যদিকে আপনি যখন কাজ করবেন তখন শুধুই কাজ করুন। কাজ আর ভালোবাসার মানুষের সাথে কথা একই সাথে করতে যাবেন না। ফলে যা হবে তা হচ্ছে আপনি না পারবেন কাজের দিকে মন দিতে না পারবেন তার দিকে। হা হুম ছাড়া কথা হবে না কিছু। আর সম্পর্কের মাঝে সৃষ্টি হবে দূরত্ব।
যা চাচ্ছেন তা বোঝাতে না পারা
সম্পর্ক ভাঙার ক্ষেত্রে এটি একটি অনেক বড় কারণ। আপনি যা বোঝাতে চাচ্ছেন ঠিক যদি তার বিপরীতটি বোঝান তাহলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। ভুল বোঝাবুঝি যেমন হবে তেমনি তাতে আপনার মনে বাজে মনোভাব জন্মাবে। আর তাতে আপনার ভালোবাসা হারিয়ে যাবে।
কথা লুকিয়ে রাখা
আপনার কাছে থেকে যখন কেউ কথা কিংবা যেকোনো কিছু লুকিয়ে রাখে আপনার সেই সময় নিশ্চয়ই রাগ হয়। আপনার কাছে নিজেকেই নিজের অবহেলিত লাগে! ঠিক এমনটিই ঘটে আপনার ভালোবাসার মানুষটির সাথে। আপনি যখন তার থেকে কথা কিংবা যেকোনো কিছু লুকিয়ে রাখেন তখন তারও মনে হয় আপনার জীবনে তার গুরুত্ব নেই। এভাবে চলে আসে দূরত্ব। এর এই দূরত্ব থেকেই সম্পর্কে ভাঙন।
তার সম্পর্কে অভিযোগ
কোনো মানুষই তার জায়গা থেকে একদম নিপুণভাবে তৈরি না। আপনার কাছে আপনার ভালোবাসার মানুষটির যেকোনো কিছুই খারাপ লাগতে পারে। তবে আপনি তা তার বন্ধুদের সাথে ভাগাভাগি করতে পারেন না। তাদের কাছে এর সমাধান চাইতে পারেন না। আপনার উচিৎ তার সাথে সরাসরি কথা বলা। সম্পর্কের মাঝে কাউকে আসার সুযোগ করে না দেওয়া। এতে সম্পর্ক ভাঙে কম এর তার স্থায়িত্ব হয় বেশি।

জয়-পরাজয়ে এশিয়া সেরা বাংলাদেশ

বিশ্বকাপে আকাশ ছোঁয়া সাফল্য। এরপর পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং আফগানিস্তানকে হারিয়ে ঘরের মাঠে টানা ৬টা সিরিজ জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করে বাংলাদেশ। আর ২০১৫ আইসিসি বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডে র্যাংফকিংয়ের সেরা আট দলের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের হিসেবে এশিয়ার সেরা দল বাংলাদেশ। আর সব মিলিয়ে মাশরাফিবাহিনীর অবস্থান পাঁচে।
bangladesh
বিশ্বকাপের পর ১৯ ম্যাচ খেলে ১০টিতে জয়লাভ করে বাংলাদেশ, পরাজিত হয় নয়টিতে। যা এশিয়ার দলগুলোর মধ্যে যা সর্বোচ্চ। একই সময়ে ২১ ম্যাচ খেলে ৯টি ম্যাচে জয়ের দেখা পায় ভারত, হার ১২টিতে। অন্যদিকে পাকিস্তান ২৪টি ম্যাচ খেলে ১৮টিতে হেরেছে, জয় পেয়েছে ৬টিতে। আর শ্রীলঙ্কা ২৮টি ম্যাচ খেলে ১৯টিতে হেরেছে, জয় হয়েছে পাঁচটিতে।


তবে এ সময়ে জয়-পরাজয়ের বিবেচনায় সবচেয়ে সফল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত দুই বছরে ৩৫টি ম্যাচ খেলে ২৩টিতে জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা, হারে ১১টিতে। একই সময়ে ইংল্যান্ড ৩৬টি ম্যাচ খেলে ২১টিতে জয়, হারে ১৩টি ম্যাচে।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়া ৩৬টি ম্যাচ খেলে জয় পায় ২০টিতে, হারে ১৫টি। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড ৩৮ ম্যাচ খেলে ২০ ম্যাচে জয়ের দেখা পায়, বাকি ১৭ ম্যাচে হেরে যায়।

Monday, May 29, 2017

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা

ঘূর্ণিঝড় মোরা আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টার দিক থেকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এটি কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হয়। সকাল ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করছিল।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে; উপড়ে পড়েছে গাছপালা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আগামী দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্য বাংলাদেশের উপকূল পুরোপুরি অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আবহাওয়া অধিদফতরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান তিনি।
সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, মোরা ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার বেগে টেকনাফে ও ১১৪ কিলোমিটার বেগে সেন্টমার্টিনে আঘাত করে। তিনি জানান, কক্সবাজারের টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রামের কুতুবদিয়া অতিক্রম করে এটি এগোবে ভারতের মনিপুরের দিকে।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড় মোরা কুতুবদিয়ার নিকট দিয়ে কক্সবাজার – চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরা এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৬৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে কক্সবাজারে ৪০ গ্রামের কয়েক শ ঘরবাড়ি প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরসমূহকে ‘সাত’ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ‘১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত’ দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া পায়রা ও মংলা বন্দরকে ‘৫’ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ‘৮’ নম্বর পুনঃ ‘৮’ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।


সোমবার  রাতে আবহাওয়া অধিদফতরের ১২ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে একথা বলা হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে আজ সকাল থেকে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ-ছয় ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আঘাত হানছে। বিশেষ করে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে কয়েকটি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে আরও বেড়িবাঁধ বিলীন হলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যাও বাড়বে। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার জন্য লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।

আজ সোমবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের প্লাবনে ৪০ গ্রামের কয়েক শ ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে হাজারো মানুষ।

উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আরও সামান্য উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে একই এলাকায় (১৮.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল।

এটি আজ (সোমবার) সন্ধ্যা ৬ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্রগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

পাউবো সূত্রমতে, জেলার টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলার পাউবোর ৫৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে আড়াই কিলোমিটার, মহেশখালীর ধলঘাটা ইউনিয়নে দেড় কিলোমিটার, মাতারবাড়ি ইউনিয়নে ১০০ মিটার ও কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীতে ৮০ মিটারসহ পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে। এ ছাড়া জেলার পেকুয়া, কুতুবদিয়া উপজেলায় আরও সাত কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে এসব অর্ধভাঙা ও নড়বড়ে বেড়িবাঁধ বিলীন হতে পারে।

কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য ও টেকনাফ উপজেলার পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শফিক মিয়া বলেন, মোরার প্রভাবে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম অংশের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়েছে আটটির বেশি গ্রাম। আড়াই বছর ধরে এখানে কোনো প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নেই। এ এলাকার ভাঙা বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকার গত বছর ১০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও এ পর্যন্ত কাজ শুরু হয়নি। অন্যদিকে জোয়ারের ধাক্কায় উপজেলার খুরেরমুখ, সাবরাং, আছারবনিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আরও কয়েক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এতে উপকূলের হাজার হাজার মানুষ উদ্বিগ্ন।

মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, আজ দুপুরে জোয়ারের ধাক্কায় দ্বীপের পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণপাড়ার শতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এতে লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েছে।

তিনি আরও জানান, জোয়ারের প্লাবনে এই ধলঘাটা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নের প্রায় তিন কিলোমিটার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ার-ভাটা চলছে। নিম্নমানের (বালুর বাঁধ) কাজ করায় বেড়িবাঁধ টেকসই হচ্ছে না। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় মোরা এই আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে আঘাত হানার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরিয়ে আনা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ভাঙা বেড়িবাঁধ নিয়ে উপকূলের লাখো মানুষ আতঙ্কে আছেন। এই মুহূর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে জেলায় ২৪টি উপকূলীয় ইউনিয়নকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সাবরাং, সেন্ট মার্টিন, বাহারছড়া, কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদণ্ডী, পোকখালী ও খুরুশকুল, কক্সবাজার পৌরসভার সমিতিপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা, কুতুবজোম, মাতারবাড়ি, কুতুবদিয়া উপজেলার আলীআকবরডেইল, উত্তর ধুরুং, দক্ষিণ ধুরুং, পেকুয়া উপজেলার মগনামা, রাজাখালী ও উজানটিয়া উল্লেখযোগ্য।

জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্রমতে , ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে শুধু এই মগনামা ইউনিয়নে সাত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছিল। তখন বেড়িবাঁধের পাশে সবুজ ঘন প্যারাবনও ছিল। আর এখন ঘূর্ণিঝড় মোরা আঘাত হানলে ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ, এখন বেড়িবাঁধের পাশাপাশি প্যারাবনও নেই

Sunday, May 28, 2017

বাস পোড়ানোর অভিযোগ নিয়ে বিব্রত বরিশাল আ.লীগ

২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় সরকারদলীয় সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথের নির্দেশে বাসে আগুন দিয়ে ১১ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়—আওয়ামী লীগ নেতা ও বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মইদুল ইসলামের এমন তথ্য উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজনীতিতে।
কথা বলে জানা গেছে, দলীয় সাংসদ পঙ্কজের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মইদুল ইসলামের এই বক্তব্য এবং পঙ্কজের পাল্টা বক্তব্যে বরিশাল ও মেহেন্দীগঞ্জ আওয়ামী লীগ বিব্রত।
এ নিয়ে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় সরকারি দলের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সাংসদ পঙ্কজের সমর্থকেরা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজের নির্বাচনী এলাকা মেহেন্দীগঞ্জ। মইদুলের বাড়িও একই এলাকায়।
মইদুল ইসলাম গত মঙ্গলবার বরিশাল জেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াত সারা দেশে জ্বালাও-পোড়াও চালিয়েছিল। ওই বছরের ২ ডিসেম্বর রাতে ঢাকায় বিহঙ্গ পরিবহনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় ১১ জনকে।
প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতি আদায় করে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য বিহঙ্গ পরিবহনের চেয়ারম্যান পঙ্কজের নির্দেশেই ১১ জনকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
এই বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে তখন মইদুল ইসলাম বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ওই সময় ফেসবুকে দেখেছি এবং পড়েছি।’
এরপর বৃহস্পতিবার সাংসদ পঙ্কজ মেহেন্দীগঞ্জে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে প্রশ্ন তোলেন, বিতর্কিত প্রশ্ন তুলে মইদুল ইসলাম কার স্বার্থ রক্ষা করছেন? তিনি বলেন, মইদুলের বক্তব্য অসত্য ও ভ্রান্ত। এটা তাঁর (পঙ্কজ) রাজনৈতিক ভাবমূর্তি বিনষ্টের অপচেষ্টা।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, পঙ্কজ ও মইদুলের বিরোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২৩ মে অনুষ্ঠিত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ১১ নম্বর চানপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে। মইদুল ইসলাম চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেন মাহে আলম ঢালীকে। বিদ্রোহী প্রার্থী হন সাংসদ পঙ্কজের অনুসারী বাহাউদ্দিন। নির্বাচনে জয়ী হন বাহাউদ্দিন। কেন্দ্র দখল ও এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহে আলম নির্বাচন বর্জন করেন।
ওই দিনই বরিশালে সংবাদ সম্মেলন করে পঙ্কজের বিরুদ্ধে মানুষ পুড়িয়ে মারার অভিযোগ তোলেন মইদুল। এ সময় মাহে আলমও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে মইদুল দলীয় সাংসদ পঙ্কজের বিরুদ্ধে হাওয়া ভবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা, জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ গঠন, এলাকায় দখল, সরকারি অর্থ লুট করা, সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করানোর অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ পঙ্কজ গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মইদুল ইসলাম সিনিয়র রাজনীতিক। আমি জানি না, তিনি এটি বুঝে বলেছেন, নাকি না বুঝে বলেছেন। এটা ঠিক যে বিহঙ্গ পরিবহনের মালিকদের একজন আমি। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় এমন দিন ছিল না যে আমাদের গাড়ি পোড়ানো হয়নি বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, মইদুলের বক্তব্য আওয়ামী লীগকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। এ অবস্থায় মইদুল কিছুটা চাপে পড়েছেন। গতকাল তাঁর অফিস ও বাসায় যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ ছিল।
অবশ্য গতকাল বিকেলে মইদুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে গণমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যের বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা পাঠান। তাতে তিনি দাবি করেন, ‘…বিহঙ্গ পরিবহন জামায়াত-বিএনপির রোষানলের শিকার হয়ে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় পঙ্কজ ওই পরিবহনের চেয়ারম্যান হিসেবে সহানুভূতি পেয়ে হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের মনোনয়ন লাভ করেন। আমার বক্তব্য ছিল এ রকম। এ বক্তব্যটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে বিএনপি ইস্যু সৃষ্টি করছে, যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত।’
এদিকে মইদুল ইসলামের বক্তব্যের পর বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। দোষ চাপিয়েছে বিএনপির ওপর।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করার জন্য ২০১৩ সালে সরকারি মদদে গাড়িতে যে অগ্নিসংযোগ এবং মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে, এখন মইদুলের বক্তব্যে তা-ই প্রমাণিত হয়।
স্থানীয় রাজনীতিতে মইদুলের পক্ষের হিসেবে পরিচিত মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামালউদ্দিন খান বলেন, মইদুল ইসলামের বক্তব্যে দল বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। তাঁর এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া সমীচীন হয়নি

Thursday, May 25, 2017

নাসির একাদশে থাকুক কে কে চান?
সারাদেশে সরকারি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও ১০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী মে মাস থেকে। শিক্ষক সংকট নিরসনে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পুল ও প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের মামলা জটিলতায় গত তিন বছর থেকে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত হয়। এ ক্যাটাগরির শিক্ষকদের নিয়োগ জটিলতা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। ফলে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও তা স্থগিত হয়ে যায়।
সূত্র জানায়, এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরু হয়ে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে আবেদন প্রক্রিয়া, সেখানে ১০ হাজার আসনে প্রায় ১২ লাখ আবেদন জমা পড়ে। পরে মামলা জটিলতায় এ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এরপর পুল ও প্যানেলের সব শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে ৩০ মার্চের মধ্যে এসব শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনার ভিত্তিতে দেশের সব জেলা থেকে শূন্য আসনের তালিকা সংগ্রহ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর।
জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় সরকারি শিক্ষকদের ২৫ হাজারের বেশি শূন্য পদ রয়েছে। তার মধ্যে ১৭ হাজার পুল ও প্যানেল শিক্ষক রয়েছে। তাদের অনেকে অন্য চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তাই সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষক যোগদান করতে পারেন। এ কারণে মে মাসে নতুন নিয়োগের মাধ্যমে বাকি শিক্ষক শূন্য আসনে পূরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের আইন শাখার কর্মকর্তা আসাদুল আলম বলেন, পুল-প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়ায় আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়েছে। ফলে এখন থেকে শিক্ষক নিয়োগে আর কোনো জটিলতা থাকছে না। বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক সুলতান মাহামুদ বলেন, সারাদেশের প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শূন্য আসনগুলোতে ইতোমধ্যে পুল-প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প

 আলোচিত পদ্মাসেতুর সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এ ছাড়া মূল সেতু নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৩৭ শতাংশ। অন্যান্য অংশের কাজও প্রায় শেষ। সব মিলিয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের এ সেতুর নির্মাণ কাজ। এ ছাড়া রূপপুর পরামানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে থাকা অধিকাংশ মেগা প্রকল্পই এগিয়ে যাচ্ছে বাস্তবায়নের দিকে। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তৈরি করা ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফাস্টট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সরকারের বিশেষ নজরদারির কারণে চলতি মেগা প্রকল্পগুলো সার্বিক অগ্রগতির হার ভাল। ফলে এডিপি বাস্তবায়নে এর একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই সঙ্গে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার যে বেড়েছে সেক্ষেত্রেও মেগা প্রকল্পগুলোর অগ্রগতির একটা ভূমিকা রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এসব মেগা প্রকল্পের অগ্রগতি আরও বেশি হবে। সেভাবেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
ফাস্টট্র্যাক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়-
পদ্মাসেতু : এপ্রিল পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির জাজিরা প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ ৯৫ শতাংশ, মাওয়া প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ ১০০ ভাগ, সার্ভিস এরিয়া-২ এর কাজ ১০০ ভাগ, নদী শাসন কাজ ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পটির অনুকূলে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ৬৭৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ১৯৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, যা আরএডিপি বরাদ্দের ৪৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম এর আগে বলেছিলেন, ‘যেভাবে বাস্তবায়ন কাজ এগিয়ে চলছে আমি এখনো আশাবাদী ২০১৮ সালেই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। সে জন্যই দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি।’
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র : এ প্রকল্পটির প্রথম পর্যায় কাজের ৯৪ দশমিক ৯ শতাংশ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। প্রকল্পটির প্রথম ও দ্বিতীয় চুক্তির কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। তৃতীয় চুক্তির কাজ অধিকাংশই শেষ। চতুর্থ চুক্তির কাজ সন্তোষজনকভাবে শেষ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে আরএডিপিতে বরাদ্দ ২১৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। মার্চ পর্যন্ত ব্যয়ের হিসাব পাওয়া গেছে। সে হিসেবে খরচ হয়েছে ১৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
মেট্রোরেল: মেট্রোরেল প্রকল্পটির কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ-১ এর জন্য টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই ২,৩, ৪নং প্যাকেজের চুক্তি হয়েছে। ৫ ও ৮ নং চুক্তির টেন্ডারের কাজ চলছে। চলতি অর্থবছরের আএডিপিতে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ১৮২ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৬৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র : প্রকল্পটির ওনারস ইঞ্জিনিয়ারস এবং কয়লা পরামর্শক নিয়োগের কাজ ১০০ভাগ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র এবং ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন-১ এর কাজও শতভাগ শেষ হয়েছে। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র : এ প্রকল্পটির ওনারস ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ এবং জমি সংক্রান্ত দায়িত্ব এবং পরিবেশ সংক্রান্ত ক্লিয়ারেন্স এর কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া বাউন্ডারি ফেন্সিং কাজও শেষ হয়েছে। চলতি অর্থবছর আরএডিপিতে বরাদ্দ ছিল ৪৬৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা টাকা। গত এপ্রিল পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৫৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আরএডিপি বরাদ্দের ৭৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে।
এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ : প্রকল্পটি বিল্ড ওন অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গত বছরের ১৮ জুলাই টার্মিনাল ব্যবহার সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে। এ ছাড়া এলএনজি আমদানির জন্য এখনো কাতারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া জিও টেকনিক্যাল সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে বিসন টেস্টের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডিজাইনের কাজ চলছে।
সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর : এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এখনো অর্থায়ন কোন উৎস থেকে হবে সেটি চূড়ান্ত হয়নি। এটি চূড়ান্ত হলেই ণির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর : এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১ হাজার ১২৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ্র আওতায় জমি অধিগ্রহণ, ওয়ার হাউজ নির্মাণ, সার্ভে বোর্ট,পাইট ভেসেল ইত্যাদি ক্রয় করা হবে। চলতি অর্থবছরে আরএডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ২০০ কোটি টাকা। গত জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩৬০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৩২ শতাংশ।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ : প্রকল্পটির অনুকূলে চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ৪ হাজার ১০২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৭৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা, যা আরএডিপি বরাদ্দের ১৪ শতাংশ। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি বলা হয়েছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ।
দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মায়ানমারের নিকটে ঘুমধুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ : এ প্রকল্পটির অনুকূলে চলতি অর্থবছরের আরএডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ১ হাজার ৩১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। গত মার্চ মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যা বর্তমান অর্থবছরের আরএডিপি বরাদ্দের ৫৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বরিশালে তাপপ্রবাহ কমার আপাতত সম্ভাবনা নেই। অপেক্ষা করতে হবে বৃষ্টির জন্যেও । বিশেষ করে বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আগামী চারদিনেও তাপপ্রবাহের এ ধারা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
তবে এসময় উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার কিছু কিছু এলাকায় সামান্য বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া ২৯ মে থেকে ঢাকা ও এর পাশ্ববর্তী জেলাগুলোসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক।
তিনি জানান, তখন বৃষ্টি হলে তাপপ্রবাহ কিছুটা কমে আসবে। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৯টায় আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়- বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
তবে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া ২৭ ও ২৮ মে কিছু কিছু অঞ্চলে এবং ২৯ মে থেকে দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। তখন তাপপ্রবাহ কিছুটা কমে আসবে।
২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার সর্বশেষ বার্তায় বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে, যা উত্তর বঙ্গেপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এতে বলা হয়- রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।’’

বরিশালে ব্যবসায়ীদের মারধর করে দোকানে তালা মারলো অস্ত্রধারীরা

বরিশালে ব্যবসায়ীদের মারধর করে দোকানে তালা মারলো অস্ত্রধারীরা


বরিশাল নগরীর চকবাজার এলাকায় রাতের আধারে ৪টি কাচামালের আড়তে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্বসস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এসময় তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে গেলে ব্যবসায়িদের মারধর করে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ঘটনার পরে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করা হলেও সহযোগিতা পায়নি বলে অভিযোগ করেছে ব্যবসায়িরা।
এমতাবস্থায় দোনকানের ভেতরে থাকা কাচামাল পচনের আশঙ্কায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে- চকবাজর পোল সংলগ্ন পিয়াজপট্টির মুখের ৪টি কাচামালের আড়ত তালাবদ্ধ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ওপরে একটি সাইনবোর্ডও টাঙিনো রয়েছে। এতে মো. মেহেদী হাসান নামে এক ব্যক্তি মোবাইল নম্বার তুলে ধরে নিজেকে জমির মালিক দাবি করেছেন।
৪টি আড়ত মালিক মো. আজাদ, উত্তম কুমার সাহা, জয়ন্ত কুমার সাহা ও মিজানুর রহমান জানিয়েছেন- বুধবার রাত ১০টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন স্বসস্ত্র অবস্থায় উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এসময় জানতে চাইলে তারা ভবন মালিক দাবি করে আড়ত ছেড়ে ফের বেড়িয়ে যেতে বের।
কিন্তু কেউ না বের হলে তাদের মারধর করে বের করে দিয়ে আড়তে তালা ঝুলিয়ে চলে যায় অস্ত্রধারীরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ি খলিল জানিয়েছেন- মেহেদী হাসান মুরাদ নামে ওই ব্যক্তি ভবন মালিকের কাছ থেকে আড়তের জমি কিনেছেন দাবি করেছিলেন। কিন্তু তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।
তবে জমি মালিক দাবিদার মেহেদী হাসান মুরাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মালিকের ছেলের কাছ থেকে কিনেছেন বলে দাবি করছেন।
অথচ ভবনের প্রকৃত মালিক বাবু সোনা ও তার ভাই পরশের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারাও অস্ত্রধারীদের চিনতে পারছেন না। যে কারণে বৃহস্পতিবার চকবাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এবায়দুল হক চান ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন হাওলাদারের উপস্থিতে তালা ভেঙে ফেলেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে জমি মালিক দাবিদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।’’
একই প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন মামুন জানিয়েছেন বিষয়টি তিনি শুনেছেন। খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

Sunday, May 21, 2017

vshow 0518222817780

বরিশালে এক রশিতে আত্মহত্যা প্রেমিক যুগলের


বরিশালে এক রশিতে আত্মহত্যা প্রেমিক যুগলের

বরিশালে এক রশিতে আত্মহত্যা প্রেমিক যুগলের – বরিশালের মুলাদীর সফিপুর গ্রামে এক রশিতে আত্মহত্যা করেছে প্রেমিক যুগল। গতকাল শুক্রবার সকালে ওই গ্রামের ফরিদা বেগমের পরিত্যক্ত ঘরের আড়া থেকে ওই প্রেমিক যুগলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

আত্মহত্যাকারী প্রেমিক সোহেল (১৯) সফিপুর গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন হাওলাদারের ছেলে এবং প্রেমিকা জান্নাতুল ফেরদৌস টিয়া (১৯) একই গ্রামের দুলাল বেপারীর মেয়ে। তারা দু’জনে উপজেলার সৈয়দ বদরুল কলেজের এইচএসসি’র দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষ

 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোহেল ও টিয়া প্রাইমারী থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং সর্বশেষ কলেজে একই সাথে লেখাপড়া করে আসছিল। স্কুল থেকেই তাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। কিন্তু এ প্রেম মেনে নিতে পারেনি টিয়ার পরিবার। এ কারণে সোহেল ও টিয়া দু’বার পালিয়ে যায়।

 

পরবর্তীতে উভয় পক্ষের পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে যে যার বাড়িতে ছেলেমেয়েকে নিয়ে যান। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে টিয়ার পরিবারকে বোঝানোর চেষ্টা চলে টিয়ার সাথে সোহেলের বিয়ের বিষয়টি। কিন্তু টিয়ার পিতা কোনভাবে এ বিয়েতে রাজী হননি।

 

ধারনা করা হচ্ছে এর জের ধরে গত শুক্রবার গভীর রাতের কোন এক সময় সোহেল ও টিয়া ঘর থেকে বের হয়ে পরিত্যক্ত ওই ঘরে গিয়ে একই দড়িয়ে ফাঁসে আত্মহত্যা করে। গতকাল টিয়া ও সোহেলের পরিবার তাদেরকে না পেয়ে প্রথমে ধারণা করে তারা আবার পালিয়েছে।

 

পরবর্তীতে গ্রামবাসী ওই ঘরে সোহেল ও টিয়ার ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশ ও উভয়ের পরিবারকে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সোহেলের মা ফকরুন্নেছা বেগম জানান, টিয়ার পিতার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করবেন।

 

মুলাদী থানার ওসি মতিউর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, উভয়ের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।

Saturday, May 20, 2017

আমার কোন বই ছিলো না, পরীক্ষার মাত্র ২৬ দিন আগে বই কিনে ‘এ মাইনাস পেয়েছি’: সাকিব

আমার কোন বই ছিলো না, পরীক্ষার মাত্র ২৬ দিন আগে বই কিনে ‘এ মাইনাস পেয়েছি’: সাকিব

‘সাকিব আল হাসান: আপন চোখে, ভিন্ন চোখে’-বইটি উপলক্ষ্যে নিজের বাসায় বসে জীবনের দীর্ঘতম ও সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন সাক্ষাতকারটি দিয়েছিলেন সাকিব। আজ থেকে তিন বছর আগের এই মহাগুরুত্বপূর্ন সাক্ষাতকারটির প্রথম পর্ব দিয়ে আমরা শুরু করছি আমাদের সাকিব উৎসব-
আজ থেকে ঠিক আট বছর আগে এই দিনে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট শুরু করেছিলেন। একেবারে কম সময় নয়। আট বছরে কতোটা বদল এলো জীবনে? ক্রিকেটে কতোটা পরিবর্তন দেখলেন?
জীবনে তো অনেক পরিবর্তন এসেছে। সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটে কতোটা পরিবর্তন হয়েছে, সেটা তো বড় ব্যাপার। আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের কথা যদি বলি, মনমানসিকতায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। ২০০৬ সালের সেই সময়ের সঙ্গে যদি তুলনা করি, তাহলে এখন ক্রিকেটারদের প্রতিদ্বন্ধীতা করার মানসিকতা অনেক বেশী। জেতার জন্য খেলার প্রবনতা এখন অনেক বেশী। সবমিলিয়ে মানসিক এই পর্যায়েই পরিবর্তনটা বেশি হয়েছে।
আপনার নিজের কতোটা পরিবর্তন হলো?
তা তো অনেক। প্রথম যখন এলাম, তখন তো শুধু আনন্দ, খুশি। তখন ক্রিকেট ছিল শুধুই উপভোগের ব্যাপার। তখন কোনো টেনশন ছিল না, কোনো প্রত্যাশার ব্যাপার ছিল না। কিন্তু যখন ভালো খেলা শুরু করেছি, আস্তে আস্তে প্রত্যাশা বেড়েছে। এরপর এই প্রত্যাশা পূরণের একটা চাপ তৈরী হয়েছে। সেটা পূরণের একটা দায়িত্বও তৈরী হয়েছে। অনেকদিন ধরে খেলার ফলেও এক ধরণের দায়িত্ব চলে আসে। সবমিলিয়ে বলতে পারেন, এটা সময়ের পরিবর্তন। এইসব পরিবর্তন ছাড়া ব্যক্তি আমার তেমন কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না।
আপনার ছোটবেলার গল্প, বিকেএসপির গল্প; কমবেশি আপনার কাছেই শুনেছি। সেই ছোটবেলার একটা ব্যাপারে আমার আগ্রহ আছে। সে সময়ের বন্ধুদের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ আছে?
প্রায় সবার সঙ্গেই আছে। কারো সঙ্গে একটু বেশি, কারো সঙ্গে একটু কম। কিন্তু যোগাযোগ আছে। এমন বন্ধু বোধহয় নেই, যার সঙ্গে একেবারেই যোগাযোগ হয় না। আর কিছু না হোক, ঈদে তো একবার দেখা হয়। তবে এটা ঠিক যে, যোগাযোগ অনেক কমে গেছে। কারণ এটাই বাস্তবতা। এখন সবাই যার যার জীবন নিয়ে অনেক ব্যস্ত। এখন আর তো সেই দিন নেই যে, আগের মতো সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকা, একসঙ্গে আড্ডা দেওয়া যাবে। জীবনই তো এখন অনেক সিরিয়াস। এখন বয়সটাই এমন। এখন কেউ চাকরি করছে, কেউ পড়াশোনা শেষ করেছে, কারো আবার বাচ্চা হয়েছে, সংসার হয়েছে।
সবার খোজ খবর রাখেন? কে কেমন আছে?
সবারটাই জানি। আমাদের মাগুরার সার্কেলটার একটা দারুন দিক হল, সবাই খুব প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। আমাদের ব্যাচে ডাক্তার আছে বেশ কয়েক জন, বুয়েট থেকে বেরিয়েছে কয়েক জন, বেশিরভাগই ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে ভালো ভালো সাবজেক্টে পড়েছে। মানে কাউকেই পাবেন না, যে জীবনে খুব একটা সফল হতে পারেনি। এরকম ব্যাচ আপনি খুব একটা খুজে পাবেন না। আমাদের ব্যাচের সবাই খুব সফল।
হঠাৎ করে কোনো পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে কী হয়?
আমার সাথে এরকম হঠাৎ করে এখন আর পুরোনো বন্ধুদের কারো সঙ্গে দেখা হয় খুব কম। এখন আর সে সুযোগও নেই। আমার সঙ্গে অনেকের সঙ্গে অনেক দিন পর একসঙ্গেই দেখা হয়। একজনের সঙ্গে হঠাৎ দেখা খুব একটা হয় না। আসলে আমি ছাড়া বাকী বেশীরভাগ বন্ধুরা হল পড়াশোনার দিকে। ফলে ওদের ঘোরাফেরা, ছুটি হয় একই সময়ে; আমি সে সময়ে হয়তো খেলা নিয়ে থাকি। ফলে ঈদে বা এরকম ছুটিতে একসঙ্গে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়, একজনের সঙ্গে হঠাৎ আর হয় না।
আপনার বর্তমান জীবনে ফিরে আসি। আপনার সঙ্গে মিডিয়ার সম্পর্ক তো খুব ইন্টারেস্টিং। বলা হয় একটি পত্রিকার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক খুব ভালো, অন্য একটির সঙ্গে খুব খারাপ। এই ধারণাটা কেন তৈরী হয়েছে বলে মনে হয়?
আমি আসলে এভাবে কখনো ভাবিনি। যে সম্পর্ক ভালো বলে ধারণা আছে, সেটা নিয়ে তো বলার কিছু নেই। কারণ আমি তো বটেই, সবাই চায় সব মিডিয়ার সঙ্গে, সবার সঙ্গে সম্পর্কটা ভালো থাক। কেউ কখনো চাইবে না, কারো সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হোক। আপনি বলেন, এটা কী কেউ ভাববে যে – এর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খারাপ করা দরকার! কেউ চায় না সম্পর্ক ইচ্ছে করে খারাপ করতে। আমিও কখনো করবো না; কোনো বোধশক্তি-ওয়ালা মানুষই সেটা চাইবে না। আমারও কখনো সেটা ছিল না। ফলে এটুকু বলতে পারি, যে আমি কখনো কোনো মিডিয়ার সঙ্গে বা কারো সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চাইনি।
সংবাদ সম্মেলনে বা সাংবাদিকদের সঙ্গে আপনার সামগ্রিক আচরণ নিয়ে অভিযোগ আছে। কাটা কাটা উত্তর দেন, অনেক সময় তাচ্ছিল্য করেন, যেটা বলার তা বলেন না…
সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারটা বলি। আমি আসলে যেটা বাস্তবতা সেটাই সবসময় বলার চেষ্টা করি সংবাদ মাধ্যমে। হ্যা, যেটা সবাই শুনতে চান, শুনতে পছন্দ করেন; তা সবসময় বলা হয় না। হ্যা, এটা মনে হয় আমারই দোষ। আমি চাইলে আরেকটু ডিপ্লোমেটিক হতে পারি। দেখেন, ব্যাপারটা আমি কিছুই বুঝি না, তা নয়। আপনি কী প্রশ্ন করেছেন এবং কী উত্তর দিলে আপনি খুশি হবেন, আপনার পছন্দ হবে, সেটা আমি জানি। এখন আমি ওই পছন্দের উত্তরটা সবসময় দিতে চাই না। আমি সৎ থাকতে চাই। প্রশ্নটার যে উত্তর আমার সত্যি বলে মনে হয়, আমি সেটা বলি। আমার কাছে মনে হয়, এটা সমস্যা। আমি বুঝি। আমি প্রশ্ন শুনলে বুঝি, কোন উত্তরটা দিলে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিন্তু আমি চেষ্টা করি, নিজের মনের কথাটা বলার। চেষ্টা করি বলাটা ঠিক হল না; এটাই আমি। আমি আমার মতো করেই করেই উত্তরটা দিতে চেষ্টা করি। এটাই হয়তো সমস্যা।
ব্যক্তিগত পর্যায়েও আপনি সাংবাদিকদের ঠিক গুরুত্ব দেন না বা সাক্ষাতকার দিতে আপত্তি করেন, এমন সব অভিযোগও আছে।
গুরুত্ব দেই না, এটা ঠিক না। আসলে আমার ভঙ্গির কারণে এমন কারো মনে হতে পারে। কিন্তু ইচ্ছা করে আমি কাউকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, এমন কখনোই করি না। আর ব্যক্তিগত সাক্ষাতকারের ক্ষেত্রে যেটা হয়, এটা তো আসলে একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি সাক্ষাতকার দিতেই চাই। কিন্তু যে সব সময় সাক্ষাতকার চাওয়া হয়, দেখা যায় এক সঙ্গে ৩০ জন আলাদা আলাদা করে সাক্ষাতকার চাচ্ছেন। সেটা তো দেওয়া সম্ভবও না। আর আমারও তো নিশ্চয়ই সেটা দিতে ভালো লাগবে না।
সাকিব কেমন লোক? আপনি সাকিবকে কিভাবে বর্ননা করবেন?
প্রথমত মানসিকভাবে খুব শক্তিশালী মানুষ। খুবই বাস্তবানুগ চিন্তাভাবনা করা একজন মানুষ। বাস্তবকে খুব সহজে মেনে নিতে পারে। আর নিজের মতো করে চলতে চাওয়া একটা মানুষ।
এই নিজের মতো করে কেন চলতে চান? সামাজিক প্রানী হিসেবে বাচতে ইচ্ছে হয় না?
সেটা আসলে আমার কখনোই করা হয়নি। আমি বিকেএসপিতে বড় হয়েছি; অনেকটা নিজের মতো করেই বড় হয়ে উঠেছি। আমি যতোদিনের বিকেএসপি শেষ করেছি, ততোদিনে দুই বছর জাতীয় দলে খেলে ফেলেছি। মানে ঢাকা শহরে সেভাবে স্থায়ী হওয়ার আগেই আমি হোটেল জীবন, একা থাকা, ছোট্ট একটা গণ্ডিতে থাকা, অল্প বন্ধু; এগুলোতেই অভ্যস্থ হয়ে গেছি। ঢাকায় একটা মানুষ যেভাবে স্বাভাবিকভাবে ঘোরে বা অন্যদের সঙ্গে মেশে, সেটা আমি কখনোই করতে পারিনি। ফলে কী বলে এটাকে? আমি একটু আত্মকেন্দ্রিক?
না, আত্মকেন্দ্রিক বললে তো একটু নেগেটিভ হয়। এটাকেই ওই নিজের মতো করে বাচা বলে মনে হয়…
হ্যা, নিজের মতো করেই সবসময় থেকেছি। এটাই সাকিব।
আপনার এই নিজে নিজে থাকা বা একটু অন্যরকম চরিত্র নিয়ে আমি আপনার সতীর্থদের সঙ্গে, আপনার কোচদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সবাই প্রায় একটা ব্যাপার বলেছেন যে, আপনি আসলে যেমন, তেমন করে আমরা আপনাকে চিনি না। আপনাকে দূর থেকে থেকে আত্মকেন্দ্রিক, অ্যারোগেন্ট মনে হলেও আসলে নিজের জগতে খুবই আড্ডাবাজ, মনখোলা একজন ছেলে। মোদ্দা কথা, তাদের মতে আপনাকে খুব ভুল বোঝা হয়। আপনি কী একমত এ বিষয়ে?
আসলে আমার যারা ঘনিষ্ট, তারা সবাই এটাই বলবে। দূর থেকে আসলে যে কাউকেই সঠিক জাজ করা একটু কঠিন। কারো সম্পর্কে আপনি যখন দূরের ভাষ্যটা শুনবেন, তখন নেগেটিভটা সত্যি বলে মনে হবে। আবার ওই লোকটার ভাষ্য শুনলে মনে হবে, না যা শুনেছি, তার সব সত্যি ছিল না। আমার ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আমার সঙ্গে কেউ ভালোভাবে মিশলে আমার সম্পর্কে পুরো ধারণাই বদলে যাবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, আমি সৎ, অনেক সৎ জীবন যাপন করার চেষ্টা করি। আমার জীবনে ভনিতা বলে কিছু নেই, আমি কখনো কোনো প্রয়োজনে অভিনয় করতে পছন্দ
করি না। হ্যা, অন্য কারো চেয়ে আমাকে ভুল বোঝা হয়তো বেশি সম্ভব। আমি যেহেতু একটা ছোট সার্কেল নিয়ে চলে অভ্যস্থ, তাই আমার সম্পর্কে ঘনিষ্ঠভাবে জানা মানুষের সংখ্যা তো কম। আমি এই নিজের সার্কেলের বাইরে নিজেকে খুব একটা প্রকাশও করি না। ফলে আমার দু একটা আচরণ দেখে মানুষ আমাকে বিচার করে নেবে, এটাই স্বাভাবিক। যে লোকটা আমাকে কাছ থেকে বেশি দেখেনি, সেই লোকটা আমাকে এক দু বার দেখে আসলেই ধারণা করতে পারবে না যে, আমি মানুষটা কেমন। হ্যা, আপনি যাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা আমার ঘনিষ্ঠ মানুষ। আমি যাদের সঙ্গে খোলামেলা, তাদের সঙ্গে খুবই খোলামেলা। ফলে তারা এটা বলবেই যে, আমাকে খুব ভুল বোঝা হয়।
ভুল বোঝাটার আরেকটা কারণ মনে হয়, আপনার উপস্থাপন ভঙ্গি। বা আপনার কথা যেভাবে মিডিয়ায় আসে। যেমন সেই ভালো লাঞ্চের জন্য দ্রুত অলআউট হয়ে আসার কথাটা বা অরেঞ্জ জুসের কথাটা। আপনি যেভাবে বলতে চেয়েছেন, হয়তো সেভাবে লোকেরা জানতে পারেনি। এ রকম কারণে ভুল বোঝা হলে সেটা কেমন লাগে?
এটাতে আফসোস একটু হয়। আসলে কেউই তো নিজের একটা নেগেটিভ ইমেজ দাড় করাতে চায় না। হ্যা, আমি যেটা সোজা সাপটা বলি, তাতেও হয়তো কেউ কেউ কষ্ট পায়। কিন্তু এসব কথায় মানুষ কষ্ট পেয়ে তখন তো খারাপ লাগেই। আমি তো এগুলো আসলে এভাবে কখনোই মিন করিনি। কথার প্রেক্ষিতে, মজা করে কিছু কখা বলি; সেটা মূল আলোচনা থেকে আলাদা করে প্রেজেন্ট করা হলে অর্থ বদলে যায়। এটা আপনি সাংবাদিক, আপনি ভালো বুঝবেন। এসব ক্ষেত্রে পুরো ব্যাপারটা বর্ননা করলে ওই কথাটাকেই একেবারে ভিন্ন মনে হতে পারতো।
এবার একটু হালকা হতে শুরু করি। আপনি একটা সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, কবিতা আপনাকে খুব বিস্মিত করে। আবার এই যে ইলেকট্রিসিটি বা জগতের ছোটখাটো আবিষ্কার, এসবেরও আপনি বিস্মিত হন। আপনার এই বিস্ময়ের জায়গাটা একটু বলবেন?
বিস্ময়ের ব্যাপার না! এই যে মানুষ কবিতা লেখে, গান লেখে; আমি ভেবেই পাই না, কিভাবে মানুষ এমন চিন্তা করে! কিভাবে এমন মিল থাকে লেখায়, এইসব ছন্দ কিভাবে মানুষ লিখতে পারে? আমি আসলে…। আমার বৌ মাঝে মাঝে বলে, তুমি মনে হয় পাগল। কিন্তু আপনি ভাবেন, প্রতিটা কাজ। বিশেষ করে শিল্পীদের কাজগুলো কেমন বিস্ময়কর। এই যে সামনের সোফাটা দেখেন। একটা ডিজাইন, কতো ভেবে ভেবে মিলিয়েছে। আবার একটা ছবি আকে, কতো রকম অর্থ হয়; কিভাবে পারে সে!
শুধু শিল্প? বিজ্ঞান অবাক করে না?
খুব অবাক হই। এই যে লাইট জ্বলছে, ফ্যান ঘুরছে। সুইচটা টিপে দিলেই এগুলো চলছে। এটা বিস্ময়কর না? বিজ্ঞানীরা কিভাবে জানলো যে, এভাবে তারের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎকে নেওয়া যাবে! আগুন আবিষ্কার হল; আচ্ছা বুঝলাম, সেটা হয়তো পাথরে পাথরে ঠোকাঠুকি করতে গিয়ে হয়ে গেছে। তারপরও আমার প্রশ্ন আছে – আগুনটা যে ধরে থাকলো, মানুষ জানলো কি করে যে একটা জ্বালানি দিতে হবে। আসলে প্রতিটা মানুষের কাজ দেখে আমি মুগ্ধ হই, আমার শ্রদ্ধা তৈরী হয়।
ক্রিকেটে এমন বিস্ময় আছে?
আইন কানুনের ব্যাপারটা ভাবেন। আইন কানুনগুলো কতো পূর্নাঙ্গ! কিন্তু যারা প্রথম এটা বানালো, তারা এতো সব সুক্ষ্ম দিক কিভাবে মনে রাখলো? আমার তো পড়েই মনে থাকে না। আসলে আমি বলি, প্রতিটা পেশা, প্রতিটা কাজ একটা শ্রদ্ধার দাবি রাখে। একটা সাধারণ কর্মজীবি থেকে শুরু করে করপোরেট অফিসের প্রধান; সবার দারুন দক্ষতা লাগে। একজন কেরানী থেকে একজন জজ; সবার কাজই কিন্তু খুব কঠিন। দারুন স্কিল দরকার কাজে।
মানুষের এইসব কর্মকান্ড আপনাকে মুগ্ধ করে, বিস্মিত করে। বিশ্বের এই চলতে থাকা, মহাবিশ্বের ব্যাপার স্যাপার আপনাকে অবাক করে না?
না। মহাবিশ্ব নিয়ে কেন কিছু বিস্ময় তৈরী হয় না? আমি তো মুসলিম। আমি ধর্ম অনুসরণ করে জীবনযাপন করি। তাই এ ক্ষেত্রে আমার ধর্ম যে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছে, সেটা আমি মেনে নেই। আসলে আমি সবকিছু সরল করে দেখতে পছন্দ করি। আমি বুঝি, আমি যেহেতু মুসলিম পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে, সব ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে, সত হয়ে থাকলে আমার আর বাকীটা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা না করলেও চলবে। হ্যা, আমি বিজ্ঞানের খবরটবর পড়ি। তবে এ নিয়ে ভাবি না।
রাজনৈতিক খবর পড়েন না?
হ্যা, প্রচুর পড়ি। আমাদের এখানে রাজনীতির খবরই তো সব। সকাল থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত রাজনীতি নিয়ে আলোচনা। ফলে রাজনৈতিক খবর খুব দেখি।
এতে কোনো দল বা মতের প্রতি পক্ষপাত তৈরী হয়?
না, না। সেটা হলে তো ভেতরের মজাটা বুঝতে চেষ্টা করতে পারবো না। আমি একটা একটা ঘটনার সবগুলো মত বোঝার চেষ্টা করি। কী ঘটছে, ভাবি। খুব কঠিন ব্যাপার।
ছোট বেলায় কী হতে চেয়েছিলেন?
অনেক কিছু-ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেট। যখন যে পেশায় সফল একজন মানুষ দেখতাম, মনে হত এনার মতো হতে হবে।
আইসক্রিমওয়ালা, সিনেমা হলের টিকিট চেকার?
নাহ। আসলে আমার জীবনে কখনো ড্রামাটিক কখনো কিছু চিন্তা করেছি বলে মনে পড়ি না। যেটা সম্ভব না, সেটা ভাবিনি। আমি পড়ালেখা করলে যা বলেছি, তার একটা সম্ভব ছিল। তাই লক্ষ্য গুলো খুব রিয়েলিস্টিক ছিল।
আপনার মা বলেছেন, আপনি পড়ালেখায় খুব ভালো ছিলেন।
আমিও বলি। আমি আসলেই পড়ালেখায় ভালো ছিলাম। ছোটবেলার কথা বাদ দিন। আমি ক্রিকেটে পুরো চলে আসার পর, এইচএসসি পরীক্ষার ২৭ দিন আগে বই কিনেছি, ২৬ দিন পর পরীক্ষা দিয়ে ‘এ মাইনাস’ পেয়েছি-চতুর্থ বিষয় ছাড়া ৩.৯০ পেয়েছি। বিশ্বাস হয়? আমার বই ছিল না। ২৭ দিন আগে যখন বই কিনতে গেছি, দোকানদার বলে, এ বছরের বই কিনবেন কেন? আমি বললাম, এ বছর আমার পরীক্ষা। সে অবাক হয়ে বলে, তাহলে গাইড বই নেন। আমি মূল বই কিনেছি।
ওই সময় মূল বই পড়ে পরীক্ষা দিয়েছেন?
হ্যা। একটা সাবজেক্টে মনে হয় গাইড কিনেছিলাম। আমার লাগতো না। আমি মূল বই পড়ে নিজের মতো করে সাজেশন বানিয়ে পড়তাম। সাজেশন দেয় না স্যাররা? তারা হয়তো ১০টা প্রশ্ন করে দিয়েছেন, তার ভেতর থেকে ২ টা আসবে। আমি আবার ওটাকে ছোট করে ৫ টা প্রশ্ন পড়তাম; ওখান থেকে ২ টা আসতো পরীক্ষায়।
এটাকে কী অনুমান বলবেন?
বুঝতে পারার ক্ষমতাও বলতে পারেন। একটা সাবজেক্টের কথা বলি – ইকোনমিক্স। ওখানে আমাদের একটা প্রশ্নের ‘ক’ বা ‘খ’ যে কোনো একটা অংশের উত্তর দিতে হতো। মানে, ১০টা প্রশ্নে মোট ৫টার উত্তর দিতে হবে। আমি কয়টা প্রশ্ন পড়ে গিয়েছিলাম জানেন? ৬টা। ৬টাই এসেছিল। একটা প্রশ্নে ‘ক’, ‘খ’ দুটোই এসেছিল। বাকীগুলোতে একটা করে ছিল আমার পড়া।
তার মানে একটা এদিক ওদিক হলেই বিপদে পড়ে যেতেন?
হয়তো। আবার নাও হতে পারতো। আমি আসলে বইটা খুব মন দিয়ে পড়তাম। ব্যাপারগুলো ভালো বুঝতাম। ফলে একটা ধারণা থাকতো। এরপর একেবারে না পড়া প্রশ্নেরও কিছু উত্তর করতে পারতাম। নিজে নিজে লিখতে পারতাম।
সে ক্ষেত্রে আপনি সাংবাদিকতাও তো করতে পারবেন।
হতে পারে। আমি আসলে অনেক কিছুই ভালো করতে পারতাম বা চেষ্টা করলে পারবো। হতে পারে, এক সময় সাংবাদিকতা করছি।
পড়াশোনার এই যে জীবনের কথা বললেন, তাতে ভালো অ্যাকাডেমিক একটা ক্যারিয়ারও হতে পারতো। সেটা হয়নি বলে আফসোস আছে?
না। কারণ, পড়াশোনাটা এনজয় করতাম না যে। মানে, যখন খেলা বনাম পড়াশোনার প্রশ্ন আসতো; আমি কিছুতেই পড়াশোনাটা মানতে পারতাম না। পড়াশোনা করতাম। কিন্তু কখনো ভালো স্টুডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন ছিল না। সমস্যাটা হত বিকালে অনেক সময় কোচিং করতে যেতে হত। এটা আমি কিছুতেই মানতে পারতাম না। আমি তো কল্পনাই করতে পারি না ফুটবল বা ক্রিকেট রেখে আমি কিভাবে কোচিং করতে যাবো!
আপনাকে যতোদূর বুঝি, কোনো কিছু নিয়েই আফসোস নেই। কিন্তু আপনার ফুটবল প্যাশন দেখে মনে হয়, এটা অন্তত মিস করেন।
প্যাশন ফুটবলে একটু বেশী হয়তো। আসলে প্যাশন তো ক্রিকেটেও। কিন্তু এখানে একটা ব্যাপার হয়, ক্রিকেট তো আমার রোজকার জীবন। আমার ভালোবাসা, আমার পেশা; সবই ক্রিকেট। এটা যেহেতু রোজ খেলি তাই এটার প্যাশনটা হয়তো সেভাবে প্রকাশ করি না। ফুটবলটা যেহেতু খেলি না, ওখানে, ভক্ত হিসেবে, সমর্থক হিসেবে প্যাশনের প্রকাশটা বেশিই হয়।
আচ্ছা, একটু অন্যভাবে প্রশ্নটা করি। ধরেন বার্সেলোনা না, অ্যাটলেটিকো বা মালাগার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এবং এই অলরাউন্ডার সাকিব; কোন জীবন বেছে নেবেন?
হা হা হা…। আমি এটা না বলি। আমি বলি, আমার এই জীবন নিয়ে আমি খুশি। আসলে একটু সিরিয়াস নোটে বললে, মালাগা বা বার্সেলোনার চেষ্টা করলে হয়তো ভুলও হতে পারতো। আমাদের দেশে অনেক প্রতিভাধর খেলোয়াড়ই তো আছেন। হয়তো ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তারা সফল হতে পারেননি। অনেকেই তো জানে না, কোন দিকে গেলে সফলতা আসতে পারতো। আমাদের সিস্টেম তো সেভাবে সফলতার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। আমি অনেককে দেখেছি, দারুন প্রতিভাধর, খুবই প্রতিভাধর; একটা পর্যায়ে হারিয়েই গেছে। এটা হয়তো তাদের পথ ছিল না। ফলে, ফুটবল হয়তো আমার পথ ছিল না। গ্যারান্টি কোথাও নেই, ক্রিকেটেও নেই। এখানেও আজ পারফরম না করলে কাল আপনি নেই। তবে এখানে যেহেতু সাফল্য পেয়েছি, তাই এখানেই খুশী থাকা উচিত।
সাধারণ একটা ছেলের জীবন, আপনার বয়সী ঢাকার একটা বেকার ছেলের জীবন কী আপনাকে কখনো টানে? কখনো মনে হয়, ইস ওর মতো রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা যেত বা চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়া যেত!
নাহ। উহ…। আসলে কখনো কখনো একটু যে ঈর্ষা হয় না, তা না। বোঝা বড় মুশকিল। আমি নিজেকে কখনো ওভাবে ভাবতেই দেইনি। আমি তো নিজেকে এই সাকিব হিসেবে মেনেই নিয়েছি। আমি যখন প্রথম জাতীয় দলে ডাক পেলাম, ফাহিম স্যার (নাজমুল আবেদীন ফাহিম) আমাকে বলেছিলেন, ‘সাকিব, চাইলেই কিন্তু আর দশ জনের মতো জীবন আর কাটাতে পারবা না। তোমাকে এটা মেনে নিতে হবে। তুমি দেখবা, তোমার অনেক বন্ধু রাস্তার পাশে দাড়িয়ে চা খাচ্ছে, ফুচকা খাচ্ছে; এটা তুমি চাইলেও আর পারবা না। এটাই তোমার লাইফ।’ ফলে এটা আমার মধ্যে ওভাবেই সেট হয়ে গেছে। আমি এই জীবনটাকেই মেনে নিয়েছি। তবে এমন না যে, কখনোই রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ফুচকা খাইনি। ওরকম বন্ধু সার্কেল সঙ্গে থাকলে তো করা যায়। এই তো সেদিনও রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আড্ডা দিলাম, ফুচকা খেলাম।
তাই! রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছেন বা কথা বলছেন, লোকজন তো নিশ্চয়ই বড় বড় চোখে তাকিয়ে থাকে-ওই যে সাকিব! এই দৃষ্টিটা এড়াতে পারেন?
তা তো অনেকেই তাকিয়ে থাকে। আমি যেহেতু কখনো একা এরকম দাড়াই না, ফলে খুব একটা গায়ে লাগে না। অনেকে কাছেও এসে পড়ে, কথা বলে। হ্যান্ডশেক করে, ছবি তোলে।
এরকম হঠাৎ এগিয়ে আসা লোকগুলোকে কিভাবে নেন? হঠাৎ রাস্তায় দেখে কেউ ‘সাকিব ভাই, সাকিব ভাই’ করে এগিয়ে এলো, ছবি তুলতে চাইলো…
নির্ভর করে তখন কী অবস্থায় আছি। অনেক সময় তো বিরক্তি লাগে। এমনিতে ফ্রি থাকলে, কোনো টেনশনে না থাকলে ভালোভাবেই নেই। অনেকে আসে তো। ছবি তোলে, অটোগ্রাফ নেয়। তবে ভিড়ের মধ্যে তাড়াহুড়ো করছি বা খেলা চলছে তখন গ্যালারি থেকে কেউ এগিয়ে এলো; এমন অবস্থায় বিরক্তি লাগে। আসলে এটা তো সবারই। স্বাভাবিক থাকলে থাকলে একধরণের প্রতিক্রিয়া হয়, একটু মেজাজটা অশান্ত থাকলে অন্য ধরণের প্রতিক্রিয়া।
সাকিবের এই জীবন, এটা আপনি উপভোগ করেন সবমিলিয়ে?
শতভাগ। আমি উপভোগ করি এবং খুশি এই জীবন নিয়ে।
কিন্তু এই জীবনের বাড়তি হিসেবে তো অনেক উপদ্রব আসে। সব তারকার এতো হয় না, আপনার হয়। এই জীবনের সঙ্গে বিতর্ক আসে, আপনাকে নিয়ে যাচ্ছেতাই কথাবার্তা হয়; এটা নিশ্চয়ই উপভোগ করে না?
না। বিতর্ক, এরকম কথাবার্তা তো কেউই উপভোগ করে না। তবে এটাও আমি মেনে নিয়েছি। ভালোগুলোর সঙ্গে প্যাকেজ হিসেবেই এগুলো আসে। আমাদের বাংলাদেশে এমনই নিয়ম হয়তো বা হতে পারে সব জায়গায়। আমি এ জন্য কাউকে দোষও দেই না। ধরুন, একটা বিতর্ক তৈরী করার মতো খবর, এটা মানুষ বেশী পড়তে চাইবে। আমি নিজেই তো পত্রপত্রিকায় এসব সেনসেশনাল খবর পড়তে পছন্দ করি। ফলে সেরকম কিছু পাওয়া গেলে বেশী আলোচনা হবে, বেশীক্ষন টিকে থাকবে; এই স্বাভাবিক। পজেটিভ খবরও যে মানুষ দেখে না, তা নয়। আমি এখানে নিজেকে যেটা বলে শান্ত রাখি যে-এই নিউজ বা আলোচনা বেশীক্ষন স্থায়ী হবে না। আমাদের দেশটা এতো মানুষের দেশ যে, প্রতিনিয়ত এখানে ইস্যু তৈরী হতে থাকে, বিষয় বদলায়। ফলে একটু অপেক্ষা করলেই দেখা যায়, বিষয়টা বদলে গেছে। তাই এই বাড়তি হিসেবে আসতে থাকা ব্যাপারগুলোকে নিয়ে আমি খুব বিচলিত হই না।
নিজের ব্যাপারে না হয় এরকম নির্মোহ থাকছেন। পরিবার যখন জড়িয়ে যায়? আপনি বিয়ে করার পর থেকে আপনার প্রতিটা ঘটনায়, সম্পর্ক থাকুক আর নাই থাকুক, আপনার স্ত্রীর নাম আসে। এতে কী অসহায় লাগে?
না, অসহায় লাগে না; হাসি লাগে। আমি সত্যি বলি, হাসি লাগে। আমার কী মনে হয় জানেন? মানুষ এতো ভেবে, গালি দেবে বলে দেয় না। এগুলো আসলে কী-বোর্ডের সামনে বসে, তাৎক্ষনিক যা মনে আসে, বলে ফেলে। সে নিজে যদি এইগুলো ভাবতো যে, এর কী প্রতিক্রিয়া বা এটা বললে সেটা শোভন হল কি না; তা হলে এসব বলতো না। আমি নিশ্চিত লোকজন যা বলে, সবই তাদের মনের কথা নয়।
এবার ক্রিকেট। প্রথমেই বলেন, কোন সাকিব এগিয়ে? বোলার, নাকি ব্যাটসম্যান?
আগেও অনেকবার বলেছি-পঞ্চাশ, পঞ্চাশ।
কিন্তু আপনি বোধহয় নিজেকে ব্যাটসম্যান হিসেবে দেখতে পছন্দ করেন।
না, আসলে ব্যাটিংয়ের সাফল্যটা বেশী উপভোগ করি। ব্যাটিং নিয়ে পরিশ্রমটা বেশী করি তো। তাই সেখানে সাফল্য পেলে বেশী ভালো লাগে। বোলিংয়ের ব্যাপারটা অনেকটাই হয়ে যায় বলে একটু সাফল্যটা কম উপভোগ করি মনে হয়। তার মানে এই না যে, আমার বোলিংয়ের গুরুত্বটা আমি বুঝি না। তবে ব্যাটিংটা নিয়ে অনেক বেশী সময় দেই।
মানে, বোলিংটা অনেকটাই গিফটেড বলছেন?
আমার তাই মনে হয়।
আর্ন্তজাতিক যেসব বিশেষজ্ঞ আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা বোলার সাকিবকে একটু বেশী মূল্যায়ন করেন।
এটা করার কারণ আছে। আমি বিদেশী লিগগুলো যখন খেলি, ওখানে টি-টোয়েন্টিই বেশী খেলি। এই ফরম্যাটে চার ওভার বোলিং প্রতি ম্যাচেই করি। কিছু সাফল্য আসে। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সাফল্যটা তো অমন নিশ্চিত না। রোজ ব্যাটিং পাইও না। ফলে বোলার হিসেবে চোখে একটু বেশী পড়ি। অবশ্য এখন বিদেশী দলগুলোতে একটু বেশী পারফরম করার সুযোগ পাচ্ছি।
নেটে একটু কম পরিশ্রম করেন বলে একটা জনশ্রুতি আছে। আমরা অন্তত অন্যদের তুলনায় আপনাকে একটু কম দেখি। এটা কেন একটু বলবেন?
না, আমি কম পরিশ্রম করি বলে মনে হয় না। আসলে আমি জানি, কতোটুকু পরিশ্রম করতে হবে। আমার সামর্থের সেরাটা বের করে আনতে নেটে কতোটা পরিশ্রম করতে হবে বুঝি। কেউই চায় না, তার সামর্থের সেরাটা বের হওয়ার পথে কোনো বাধা থাকুক। এখানে আরেকটা ব্যাপার আছে। আমি সিরিজের সময় একটু কম প্র্যাকটিস করি, ইচ্ছে করেই। কারণ, আমার মনে হয় ওই সময়টা মাথাকে বেশী কাজে লাগানোর সময়। প্র্যাকটিস তো এর আগেই করেছি। আগে যেটা করেছি বা অতিরিক্ত যেটা করেছি, সেটা তো দেখানোর ব্যাপার না।
আপনার কম অনুশীলন নিয়ে আপনার দু জন কোচের সঙ্গে কথা বলেছি আমি। তারা একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, আপনি আসলে অনুশীলনে নিজের সঠিক ডেলিভারি বা সঠিক শটগুলো পেয়ে গেলে আর চালিয়ে যান না। আর খুব দ্রুত সঠিকটা ধরে ফেলতে পারেন বলে তারা মনে করেন।
খানিকটা তো এরকমই। আমার কাছে যখন মনে হয়, সব ঠিক আছে; আর প্র্যাকটিস খুব একটা করি না। আসলে প্র্যাকটিস একটা তো আছে বারবার সেরাটা করতে থাকা। আরেকটা হল, নানা চেষ্টা করে সেরাটা আবিষ্কার করা। আমি সেটা করে ফেলতে পারলে আর কেন অনেক সময় ধরে করে যাবো?
আপনার সেরা পারফরম্যান্স নিয়ে বলুন। সেরা বোলিং কোনটা?
প্রথমে টেস্ট বলি। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ওই ৭ উইকেট (২০০৮, চট্টগ্রাম)। এ ছাড়াও ভালো অনেকগুলোই। আসলে আমার কাছে সবগুলোই ভালো লাগে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওই দুটো ৫ আর ৬ উইকেট। আরও এরকম কয়েকটা আছে। তবে ৭ উইকেটটা সবার আগে থাকবে। ওয়ানডেতে তো ৫ উইকেট পাইনি। চার উইকেট আছে কয়েকটা। তার মধ্যে, কোনটা?
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজে?
না। ওটার চেয়ে নিউজিল্যান্ডে যে ৪ উইকেট ওদের বিপক্ষে, ওটা বেশী ভালো লাগে। আচ্ছা, টেস্টে ইংল্যান্ডে, ম্যানচেস্টারে যে ৫ উইকেট, ওটাকেও বেশ এগিয়ে রাখতে হবে।
কন্ডিশনের কারণে এগুলোকে এগিয়ে রাখছেন? উপমহাদেশের বাইরে বলে?
খানিকটা। দক্ষিণ আফ্রিকার যে উইকেটে ওই ৫-৬ উইকেট পেলাম, এর আগে ওখানে বোধহয় কোনো বাহাতি স্পিনার ৫ উইকেট পায়নি। স্পিনাররাই তো ওখানে উইকেট পায় না খুব একটা। ফলে কন্ডিশনের কারণে এগুলো একটু এগিয়ে থাকবে-খেলাধুলা

mahmud

bakhtiar