বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড ম্যাচও যদি বৃষ্টি কারনে পরিত্যক্ত হয় কোন দল যাবে সেমিফাইনালে
কঠিন এক সমীকরণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ এ এর সকল দল। গতকাল নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চল করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। তবে পরবর্তী দল হিসাবে কোন দল যাবে এখানো নিশ্চত নয়। বাংলাদেশ, নিউ জিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া তিন দলেরই রয়েছে সেমিতে উঠার সুয়োগ।
৯ জুন নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে আর ১০ জুন ইংল্যান্ডের কাছে অস্ট্রেলিয়া হেরে গেলে সেমিতে চলে যাবে বাংলাদেশ। বাদ পড়বে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
তবে খেলার থেকে অালোচিত বিষয় লন্ডনের অাবহাওয়া। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ৯ জুন নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। ঐ ম্যাচে যদি বৃষ্টি নামে তাহলে কোন দল যাবে সেমিতে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভব্যনা বেশী। তার কারন রান রেট পয়েন্টে কিউদের থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে। তাই নিউ জিল্যান্ডকে পিছনে ফেলে সেমিতে চলে যাবে বাংলাদেশ।
তবে অবশ্যই পরের দিন ১০ জুন ইংল্যান্ডের কাছে অস্ট্রেলিয়ার হারতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ যাবে সেমিতে। অার যদি ঐ ম্যাচও বৃষ্টির কারনে পরিত্যক্ত হয় তাহলে অস্ট্রেলিয়া কনো ম্যাচ না জিতে চলে যাবে সেমিতে। অার যদি নিউ জিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশ জয়লাভ করে এবং ইংল্যান্ডের-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। তবে রান রেট পয়েন্টে বাংলাদেশ এগিয়ে থেকে চলে যাবে সেমিফাইনালে।
আরও পড়ুন : কোহলিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় তামিম:
==================================
ক্যারিয়ারের সবচেয়ে মধুর লগ্ন পার করছেন তামিম ইকবাল। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তামিমের ধার। বিশেষ করে চলমান বছরে ফর্মের তুঙ্গে আছেন এই ড্যাশিং ওপেনার। এখন পর্যন্ত নয় ম্যাচের আট ইনিংসে তামিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৫৩ রান। রয়েছে ২টি শতক আর ৩টি অর্ধশতক।
যেখানে তামিমের ব্যাটিং গড় ৭৯। দীর্ঘ দশ বছরের ওডিআই ক্যারিয়ারে এতটা ভালো সময় বোধহয় চোখে দেখেননি তামিম। ধারাবাহিক নৈপুণ্য তাকে সেরার আসনে বসিয়েছে। তার আগে ২০১৫ সালটা দারুণ কাটে তামিমের। তখন তার ব্যাটিং গড় ছিল ৪৬.৩৭। ওই বছর ১৮টি ম্যাচে ৭৪২ রান করেন তামিম। সর্বোচ্চ ইনিংস ১৩২। ছিল ২টি শতক আর ৫টি অর্ধশতকের ইনিংস। অবশ্য তামিমের ২০১৬ ছিল সাদামাটা। ৯ ম্যাচে ৪০৭ রানের পাশাপাশি ১টি শতক আর ২টি অর্ধশতক হাঁকান তামিম। ব্যাটিং গড় ৪৫.২২।
সম্প্রতি নজরকাড়া ব্যাটিংয়ের সুবাধে একটা জায়গায় বিরাট কোহলিকে ছোঁয়ার অপেক্ষায় আছেন তামিম। এ বছর অদ্যবধি ৪টি ওয়ানডে খেলেছেন ভারতীয় দলনেতা। রান করেছেন ২৬৬। রয়েছে ১টি শতক আর ২টি অর্ধ শতক।
কোহলির ব্যাটিং গড় ৮৮.৬৬। যদিও তামিমের চেয়ে খুব কম ম্যাচ খেলেছেন কোহলি। ব্যাটিং গড়ের দিক থেকে কোহলিকে ছোঁয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হলেও ওয়ানডের নাম্বার ওয়ান ব্যাটসম্যান এভিডি ভিলিয়ার্সকে ঠিকই পেছনে ফেলেছেন তামিম। এখন পর্যন্ত চলমান বছরে ১৪ ম্যাচে ৫৬১ রান করেছেন ভিলিয়ার্স। তার ব্যাটিং গড় ৬২.৩৩।
আরও পড়ুন : চ্যাম্পিয়ন ট্রপির ভরসার প্রতীক তামিম ইকবাল :
————————————————————
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দলের সব ব্যাটিং দায়িত্ব যেন নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। কিন্তু এভাবে আর কত দিন দলের সব বিপদে একা বুক চিতিয়ে লড়ে যাবেন? ব্যাটিং স্বর্গ হোক বা পুরোপুরি স্পোর্টিং উইকেট কিংবা পেস বান্ধব পিচ, দলের হাল যেন তাকেই ধরতে হয় এবং তিনি ধরেনও।
বাংলাদেশ দলের ওপেনিং পেয়ার গুলোর দিকে একবার তাকিয়ে আসা যাক। নতুন প্রজন্ম অর্থাৎ তামিমের সমসাময়িক বাংলাদেশ দল। ২০০৭ সাল থেকে এখন এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত প্রায় ১১ বছরে তামিম ইকবালের ওপেনিং সঙ্গীদের তালিকাটা দেখে নিই- শাহরিয়ার নাফিস, জাভেদ ওমর, মেহরাব হোসেন অপি, ইমরুল কায়েস, জুনায়েদ সিদ্দিকি, মুশফিকুর রহিম, নাঈম ইসলাম, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাজিমুদ্দিন, এনামুল হক বিজয়, শামসুর রহমান শুভ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন কুমার দাস। মোটমাট চৌদ্দ জন ওপেনার। এত নাম দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই এরকম হয়তো আরও অনেকে আসবেন-যাবেন। কিন্তু তামিম ইকবাল আগেও ছিলেন, এখনো আছেন, ভবিষ্যতেও আরও অনেকটা সময় থাকবেন। কারণ তিনি যে ‘তামিম ইকবাল’।
তামিমের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ এখন পর্যন্ত ওপেন করেছেন আরেক বাঁ-হাতি ইমরুল কায়েস, মোট ৪৭ ইনিংসে। এখন অবশ্য তামিমের পার্টনার কাগজে-কলমে সৌম্য সরকার। বাকি যারা ছিলেন তাদের মধ্যে এখনো আশা বেঁচে আছে শুধু আনামুল হক বিজয় আর লিটন দাশের। গুঞ্জন আছে, প্রথমজন কোচের পছন্দের তালিকায় নেই, আর দ্বিতীয়জন সহজ ভাষায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ নিতে ব্যর্থ যথেষ্ট সুযোগ পাওয়ার পরও।
সৌম্যর ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে অর্থাৎ যখন তিনি ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ডাক পান তখনই নিজের সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু তিনি অতিমাত্রায় অধারাবাহিক। এক-দুই ম্যাচ ভালো খেলার পর আট-দশ ম্যাচ যেন তার ভেতর ভূত চেপে বসে! তিনি যেন খেলা ভুলে যান, উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। তারপর হঠাৎ হয়তো একদিন ঝলকে ওঠেন। তাও ওই এক-দুই ম্যাচ। এখন পর্যন্ত এ রকমই হয়ে আসছে। অধারাবাহিকতার প্রতিলিপি। কোনো কোনো ম্যাচে তাকে ওপেনার তো দূর, একদম আনকোরা ব্যাটসম্যান লাগে, তার ফুটওয়ার্কে যে এখনো সমস্যা রয়ে গেছে তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ইমরুল কায়েস আসেন-যান, আবার আসেন। দলে তার অবস্থান অনেকটা এমনই এখন। আরও খোলাখুলিভাবে বললে, বর্তমান সময়ে সৌম্যর বদলি যেন তিনি। সৌম্য সরকার কয়েক ম্যাচ খারাপ খেললে ইমরুল কায়েসকে নামিয়ে দেওয়া হয়- এমনটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইমরুল সেভাবে কিছু করে না দেখাতে পারলে আবার সৌম্যকে মূল একাদশে সুযোগ করে দেওয়া হয়!
সাদামাটা ইমরুলের প্রতি আবার টাইগার ফ্যানদের ফিডব্যাক হলো তিনি নাকি মোটেও সাহসী নন! চলমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলের বিপক্ষেই ম্যাচ শেষে তাকে নিয়ে ঘোরতর অভিযোগ- তিনি ব্যাট হাতে ক্রিজে দাঁড়ালেই হাত-পা কাঁপাকাঁপি শুরু করে দেন!
দলের ব্যাটিং হাল তাই তামিমকেই ধরতে হয়। ভালো অনেকেই খেলেন, কেউ নিয়মিত আর কেউ অনিয়মিত। এমন না হলে কেউই দলে জায়গা পেতেন না। কিন্তু দায়িত্ববোধ যে দলের সবার মধ্যে সেভাবে হয়ে ওঠেনি সেটা দলের অধিকতর ভালো বলে পরিচিত খেলোয়াড়দের সঙ্গে তামিমের তুলনা করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। নিজের স্বভাবসিদ্ধ হার্ডহিটিং মারকাট ব্যাটিং সংযত করে তিনি যে অন্যদের মতোন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছেন না, এটাই টাইগার ভক্তদের জন্য এই মুহূর্তে অন্যতম একটা ভরসা।-ঢাকা টাইমস।
No comments:
Post a Comment